বিনা মূল্যে শস্য দেবেন ৬ দেশকে পুতিন
রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে শুরু হয়েছে রাশিয়া–আফ্রিকা সম্মেলন। এ সম্মেলন ঘিরে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা চাপে থাকা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আফ্রিকার দেশগুলোর সমর্থন ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আফ্রিকার ছয়টি দরিদ্র দেশকে বিনা মূল্যে খাদ্যশস্য সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পুতিন।
আজ বৃহস্পতিবার সম্মেলনের প্রথম দিনে পুতিন বলেন, ‘আগামী মাসগুলোয় আমরা বুরকিনা ফাসো, জিম্বাবুয়ে, মালি, সোমালিয়া, মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র ও ইরিত্রিয়ায় ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টন খাদ্যশস্য বিনা মূল্যে সরবরাহ করতে সক্ষম হব।’
পুতিনের এই প্রতিশ্রুতির কিছুদিন আগে ইউক্রেন থেকে কৃষ্ণসাগর দিয়ে খাদ্যশস্য রপ্তানির একটি চুক্তি থেকে সরে আসে মস্কো। ওই চুক্তির আওতায় কৃষ্ণসাগর হয়ে আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শস্য সরবরাহ করা হচ্ছিল। এভাবে এক বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনের বন্দরগুলো থেকে প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ টন শস্য রপ্তানি করা হয়েছে। বিশ্বে খাদ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে এই চুক্তি বড় সহায়তা করেছিল।
এদিকে সম্মেলনে যোগ দেওয়া আফ্রিকার নেতাদের উদ্দেশে চুক্তির বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। রাশিয়া চুক্তি থেকে সরে গিয়ে দরিদ্র দেশগুলোকে যে সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে, তা নিয়ে আফ্রিকার নেতাদের প্রশ্ন করার আহ্বান জানান তিনি। আজ নিউজিল্যান্ড সফরের সময় ব্লিঙ্কেন বলেন, তাঁরা জানেন বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়টা আসলে কার।
রাশিয়া–আফ্রিকা সম্মেলন দুই দিনের। শেষ হবে আগামীকাল শুক্রবার। সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসাসহ মহাদেশটির ১৭ নেতার অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। এবার দ্বিতীয়বারের মতো এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে ২০১৯ সালে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে সোচি শহরে প্রথম রাশিয়া–আফ্রিকা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
‘শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের’ আহ্বান
আজ সম্মেলনের এক অধিবেশনে পুতিনের সঙ্গে একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আফ্রিকান ইউনিয়নের চেয়ারপারসন আজালি আসোউমানি। এ সময় দেওয়া ভাষণে তিনি ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে ‘শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের’ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এতে করে এই দুই দেশের খাদ্যের ওপর নির্ভরশীল মানুষের জীবন বাঁচবে।
আফ্রিকার দেশ নাইজারে সামরিক অভ্যুত্থান ও দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে পদচ্যুত করা নিয়েও কথা বলেছেন আজালি আসোউমানি। তিনি বলেন, আফ্রিকান ইউনিয়ন এই অভ্যুত্থানের নিন্দা জানায় এবং প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমের মুক্তি চায়।
বিগত ৯ দিনে রাশিয়ার বিমান হামলায় ইউক্রেনের বন্দরের ২৬টি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই সময়ে দেশটির পাঁচটি বেসামরিক নৌযান ক্ষতির মুখে পড়েছে। গত বুধবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ওলেকসান্দ্র কুবরাকভ।
কুবরাকভের ওই বিবৃতির পর আজ ইউক্রেনের ওদেসা অঞ্চলের গভর্নর ওলেহ কিপার নতুন করে জানিয়েছেন, গতকাল রাতভর ওদেসা বন্দরের বিভিন্ন স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে একজন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছেন। আর একটি কার্গো টার্মিনালের ক্ষতি হয়েছে।
Reviewed by MD.ANISUL HOQUE BABUL
on
Thursday, July 27, 2023
Rating:
